জাতীয় ভাবে আইন দিবস পালন করা হোক
শরিফুল ইসলাম সেলিম
কথায় বলে সকলের জন্য আইন। আইনের চোখে ধনী-দরিদ্রের কোনও পার্থক্য নেই। অথচ বাস্তব চিত্রটা একেবারেই আলাদা। অনেক ক্ষেত্রেই যাদের অর্থের জোর নেই, সুবিচার তাদের কাছে অধরা থেকে যায়। মামলা-মোকদ্দমা করতে টাকার প্রয়োজন। এই অনুধাবন থেকেই দরিদ্র, পিছিয়ে পড়া মানুষের কাছে বিনা খরচে আইনি সহায়তা পৌঁছে দিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে নিম্ন আদালত পর্যন্ত সর্বত্র গড়ে তোলা হয়েছে আইনি সচেতনতা কেন্দ্র। যেখানে সম্পূর্ণ বিনা খরচে আইনি সাহায়তা পেতে পারেন দরিদ্র, পিছিয়ে পড়া মানুষ, শিশু, মহিলা, প্রতিবন্ধীরা। কিন্তু প্রচারের অভাবে আইন পাশের ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও দেশের বেশিরভাগ মানুষই এই সেবা থেকে বঞ্চিত অথবা অজ্ঞাত ।
সাধারণ মানুষকে আইন সর্ম্পকে সচেতন করে তুলতে দরিদ্র,পিছিয়ে পড়া মানুষের স্বার্থে ২০০০ সালে লিগাল এইড সার্ভিসেস এ্যাক্ট ২০০০” পাস করা হয়। কিন্তু আজও অনেকেই এই সেবা সর্ম্পকেই জানেনই না। অনেকে জানলেও দ্বিধা থেকে আসেন না। আবার আইনের আশ্রয় নিতে গেলে অনেক সময় পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের হাতে হেনস্থা হতে হয়, আদালতে বিচারক থেকে কর্মচারী সঙ্কটের কারনে মামলা নিস্পত্তিতে র্দীর্ঘসূত্রিতা- সবমিলিয়ে আদালত সর্ম্পকে মানুষের এক ধরনের অনাস্থার প্রসঙ্গও উঠে আসে প্রয়ই । আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরও অনেক সময় পুলিশ বা রাজনৈতিক দলদ্বারা হয়রানি হওয়ার অভিযোগও ওঠে। আবার অনেকে ভাবেন আদালত মানেই তো সেই কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার খরচ। এই ভ্রান্ত ধারনা থেকেই অনেকে আদালতমুখী হন না। আবার মামলা নিস্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রিতার কারনে হতাশা থেকে অনেকে আদালতে যেতে চান না। বাংলাদশের অধিকাংশ মানুষের মনে এ ধারনা বদ্ধমূল।তাই আইনের সেবা যাতে অতি সহজেই সবাই পেতে পারে সেজন্য ব্যাপক প্রচারনা চালানোর জন্য একটি দিনকে জাতীয় আইন দিবস হিসেবে ঘোষনা করে পালন করা যেতে পারে। পৃথিবীর অনেক দেশেই জনগনকে আইন সম্পর্কে সচেতন করার জন্য জাতীয় ভাবে ব্যাপক উদ্দীপনার সাথে আইন দিবস উদজাপন করা হয়।তাই আমাদের দেশেও আইন দিবসের ঘোষনা এখন সময়ের দাবি।
(ছাত্র,৪র্থ বর্ষ,আইন ও বিচার বিভাগ,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন